নিউট্রনিক জগৎ- নাসিম সাহনিক

রোবোসাইকোলজিস্ট লুসি আর নিউরোবায়োলজিস্ট কবীরের মধ্যে পরিচয় মাত্র দুদিনের। কিন্তু তারা পরস্পরের এতটা কাছাকাছি চলে এসেছে যে মনে হলো যেন অনেক দিনের পরিচয়।
লুসি : তোমার রোবোটগুলোর এত সুন্দর চুল। আর তোমার মাথায় কোনো চুল নেই!
কবীর : এটা আমার ফ্যাশন।
লুসি : এভাবে কেউ ফ্যাশন করে?
কবীর : আমি করি। ইদানীং দেখছি অনেকেই করছে। যাই হোক বিজ্ঞানের বাইরে দেখি তোমার যথেষ্ট কৌত‚হল আছে।
লুসি : এতে অবাক হওয়ার কি আছে?
কবীর : অবাক হচ্ছি না ভালো লাগছে।
লুসি : তাই নাকি?
কবীর : হ্যাঁ। এ রকম তোমার মতো অন্য কাউকে পেলে সঙ্গী করে ফেলতাম।
লুসি : আমার চুলওয়ালা ছেলে পছন্দ।
কবীর : আমার তোমার চুলের চেয়ে তোমার নিউরনের ছবিগুলো বেশ ভালো লাগে। এত স্পষ্ট ছবি তোলা শিখলে কীভাবে তুমি?
লুসি : বাবার কাছ থেকে শিখেছি। বাবা সেন্টার অফ একসেলেন্সের অন্যতম ইমেজিং সায়েন্টিস্ট ছিলেন।
কবীর : আমি জানি তোমার বাবার কথা। আচ্ছা রোবোটের যে ইমেজিং ডাটা গতকাল সেমিনারে দেখালে ওগুলো পেলে কোথায়?
লুসি : পেলাম কোথায় মানে?
কবীর : বাংলাদেশে তো আর নিউরোট্রন ইমেজিং করা সম্ভব নয় তাই না?
লুসি : তোমার সেন্টার অফ একসেলেন্সের ইমেজিং ডিপার্টমেন্ট সম্পর্কে দেখি কোনো ধারণাই নেই।
কবীর : সত্যি কি তাই?
লুসি : তাই তো। তুমি জানো না আমাদের ল্যাবের নিউরোট্রন ইমেজিং ডাটা বিশ্বের বেশিরভাগ রোবোট ব্রেইন ইমেজিং ল্যাবে ব্যবহৃত হয়।
কবীর :না জানতাম না। আমাকে নিউরোট্রনের ইমেজিং ডাটাগুলো দিও কিন্তু।
লুসি :কিনে নিতে হবে।
লুসির কথা শুনে কবীর হাসতে থাকল কিন্তু কোনো কথা বলল না।
পরেরদিন নিউরোট্রনের উপর একটা ওয়ার্কশপ শেষে বের হওয়ার সময় আবার কবীর আর লুসির দেখা হয়ে গেল।
কবীর : দেখ আমি কিনতে পারব না। তুমি যদি ইমেজিং ডাটা আমাকে দাও তাহলে আমি আমার ‘নিউরোট্রন রোবোট’ বইটি তোমাকে উপহার দেব।’
লুসি : উপহার কী দেবে? আমাকে তো বইটি ইতোমধ্যে কিনতে হয়েছে।
লুসির কথা শুনে কবীর হাসতে থাকল।
লুসি : হাসছো কেন?
কবীর : আমার বই কিনতে গেলে কেন? আমার কাছে চাইলেই তো উপহার পেতে। সত্যি কথা বলতে কী তোমাকে উপহার দিতে পারলে আমার বেশ ভালো লাগত।
লুসি : তুমি তো মেয়েদের উপহার দিতে ওস্তাদ।
কবীর আবারো হাসতে থাকল।
লুসি : হাসছো কেন? আমি কি হাসির কিছু বলেছি নাকি?
কবীর : তোমার কথা আমাকে বেশ আনন্দ দেয়। তাই হাসি।
লুসি : দেখ , এসব কথার কৌশল ছাড়ো।
কবীর : সুন্দর করে কথা বলা একটা আর্ট লুসি।
কবীর আর লুসির কথা ওইদিন আর এগোলো না। কবীরকে ওর বস মিনহাজ ডেকে নিয়ে গেল। আলম নামে এক গবেষককে সঙ্গে করে নিউরোট্রন রোবোটের সুবিধা ব্যাখ্যা করার জন্য একটা সেমিনারের ব্যবস্থা করতে হবে। সেমিনারটা হবে মিরপুরে খেলার স্টেডিয়ামের পাশেই তৈরি করা একটা অডিটোরিয়ামে।
২.
নিউরোট্রন ধরনের রোবোট নিয়ে সেমিনারের আগে কয়েকটা কথা সেরে নিল কবীর আর আলম।
আলম : নিউরোট্রন রোবোট কি পজিট্রনিক বা ইলেকট্রনিক রোবোটের চেয়ে ভালো ?
আলম চশমা ঠিক করতে করতে বললেন। গোলগাল চেহারার স্লমি এই লোকটি হিউম্যান নিউরাল নেটওয়ার্কিং নিয়ে গবেষণা করে। বাংলাদেশে নিউরাল নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে যারা বেশ বিস্তৃত আর গভীর ধারণা রাখে আলম তাদের একজন। সম্প্রতি আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক নিয়ে নতুন কয়েকটি কাজ সে শুরু করেছে। এই আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ শুরু করতে গিয়েই আলমের রোবোটের জগতে পদচারণা শুরু হয়েছে। সে নিউরোট্রন , পজিট্রন , ইলেকট্রন প্রভৃতি কণিকা নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেছে। আসলে নিউরোট্রনকে শুধু কণিকা বললে ভুল হবে। এটি আসলে মানবদেহের কোষের মতো। এর রয়েছে কোডিং ব্যবস্থা। যে কোডিং ব্যবস্থাকে মানুষের জেনেটিক কোডের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। রোবোটের রিন কোড এর ধারণা পজিট্রনিক বা ইকেট্রনিক জাতীয় রোবোটের সাথে স্যুট করে। নিউরোট্রন রোবোটের রিন কোডকে বিজ্ঞানীরা নিউরোট্রনিক রিন কোড বলতে বেশি স্বাচ্ছ্যন্দ বোধ করেন। কারণ এটি রেনেটিক কোডের চেয়ে বেশি কিছু। একেবারে জেনেটিক কোডের মতো কাজ করে। আরো একটি বিষয় যোগ করা দরকার তা হচ্ছে নিউরোট্রনিক কণিকা বা কোষগুলো শুধুমাত্র রোবোটের মস্তিষ্কে ও প্রান্তীয় কিছু জায়গায় পাওয়া যায়। প্রান্তীয় জায়গায় যে নিউরোট্রন কণিকা পাওয়া যায় সেগুলো মানুষের প্রান্তীয় স্নায়ু ব্যবস্থার কোষগুলোর মতো কাজ করে। নিউরোট্রনিক রোবোটের নেটওয়ার্কিং প্রক্রিয়াটা পজিট্রনিক রোবোটের চেয়ে বেশ উন্নত। হিউম্যানয়েড রোবোটের সবচেয়ে দক্ষ উন্নত ও মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে নিউরোট্রন রোবোট। আলম নিউরোট্রন রোবোট নিয়ে বেশ উৎসাহী । তবে ওর জানার পরিধি কবীরের চেয়ে কম।
কবীর : অবশ্যই। নিউরোট্রন রোবোট হচ্ছে হিউমানয়েড রোবোটের সবচেয়ে লেটেস্ট ভার্সন। আপনি অদ্ভুদ আনন্দ লাভ করবেন এই রোবোটের সান্নিধ্যে..
যখন কবীর আর আলম পরস্পর গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত তখন মুনমুন লুসি ল্যাবে কবীরের নিউরোট্রন রোবোট বিষয়ক বই নিয়ে পড়ায় মগ্ন। বই পড়ে যে ধারণাগুলো হচ্ছিল এগুলো সে শায়লা আর রোকেয়ার সঙ্গে শেয়ার করছিল। শায়লা তিন বছর হলো লুসির সঙ্গে সেন্টার অফ একসেলেন্সে কাজ করছে। আর রোকেয়া এসেছে ছয়মাস হলো। দুজনই লুসিকে বেশ পছন্দ করে। লুসির মতো মেধাবী বিজ্ঞানীর অধীনে কাজ করতে ওদের বেশ ভালো লাগে। দুজনই বেশ অবাক হয় লুসির সৌন্দর্য তার জ্ঞানের সঙ্গে কীভাবে যেন সুসমন্বিত হয়েছে। এতটা মানানসই ব্যাপার প্রকৃতিতে বেশ কমই দেখা যায়।
শায়লা লুসিকে নিউরোট্রন রোবোটের নেটওয়ার্কিং বুঝতে সহযোগিতা করে। নিউরোট্রন এবং নিউরন নেটওয়ার্কিংয়ের উপর শায়লার বিস্তারিত জ্ঞান রয়েছে।
রোকেয়ার রয়েছে আবেগ এবং স্মৃতিপ্রক্রিয়ার ওপর বিশেষ জ্ঞান। রোবোটের আবেগ ও স্মৃতি প্রক্রিয়াকে মানুষের একই ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করে যেকোনো পরিস্থিতি ব্যাখ্যায় পারদর্শী রোকেয়া।
এক গ্লাস পানি খাওয়ার পর নিউরোট্রন রোবোটের ইমেজিং ডাটা নিয়ে বসল লুসি।
লুসি : এই দেখতো কেমন হয়েছে এ ইমেজিং ডাটাগুলো।
রোকেয়া : ওয়াও। অনেক সুন্দর। গোলাপি অংশটা নিশ্চয়ই স্মৃতি প্রক্রিয়া প্রদর্শন করছে।
লুসি : হ্যাঁ। গোলাপি অংশের সঙ্গে মানুষের টেমপোরাল লোব আর হিপোক্যাম্পাসের কাজের যথেষ্ট মিল আছে। ওটা নিউরোট্রন রোবোটের স্মৃতি প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত এলাকা।
শায়লা : তোমার ইমেজিং ডাটা তোমার ত্বকের মতোই মসৃণ। এত সুন্দর ইমেজিং ডাটা আমি আমার জীবনে খুব কমই দেখেছি। নিউরোট্রনগুলোর মধ্যে পারস্পরিক নেটওয়ার্কিংটাও বেশ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
লুসি : এ ডাটা কালকে কবীরকে দেবো। ওর পছন্দ হবে না।
রোকেয়া : পছন্দ হতে বাধ্য। ওকে বলো যে এ ডাটা ওর মাথার টাকের মতোই মসৃণ। এর চেয়ে মসৃণ ইমেজিং ডাটা ও অন্য কোথাও পাবে না।
(সংক্ষেপিত )
ঈদ সংখ্যা ২০২৫: সেই সময়ের প্রেম- নাসিম সাহনিক
১৯০০ সালের ঢাকা। বুড়িগঙ্গার তীরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আহসান মঞ্জিল। ঢাকার নবাবদের ঐশ্বর্য ও জাঁকজমকের প্রতীক এই প্রাসাদ। শহরের আরেকপ্রান্তে, বাংলাবাজারের এক...
২৯ মার্চ ২০২৫ ০৫:০২ PMআহসান মঞ্জিল জাদুঘরের ইতিহাস
নিজস্ব প্রতিবেদক.
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর অযত্ন ও অপব্যবহারে আহসান মঞ্জিল ধ্বংসপ্রাপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে। এমতাবস্থায় ১৯৭৪ সালে...
২৯ মার্চ ২০২৫ ০৪:৪৪ PMআহসান মঞ্জিলের স্থাপত্যশৈলী কেমন?
নিজস্ব প্রতিবেদক.
এই প্রাসাদের ছাদের উপর সুন্দর একটি গম্বুজ আছে। এক সময় এই গম্বুজের চূড়াটি ছিল ঢাকা শহরের সর্বোচ্চ। মূল ভবনের বাইরে...
২৯ মার্চ ২০২৫ ০৪:৩৭ PMঢাকার আহসান মঞ্জিল
নিজস্ব প্রতিবেদক.
আহসান মঞ্জিল পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কুমারটুলী এলাকায়
ঈদ সংখ্যা২০২৩ : আনন্দপুর-নাসিম সাহনিক
আনন্দপুর
...
২৭ জুন ২০২৩ ০৬:২৫ AMপ্রেমের হাওয়া- নাসিম সাহনিক
১.
যশোরের একটি কলেজ। কেমিস্ট্রি ল্যাব পরীক্ষার জন্য সরঞ্জাম সাজাচ্ছে পিয়ন রাজ্জাক। পরীক্ষা পরিচালনা করবে শুভ্র। শুভ্র কেমিস্ট্রির লেকচারার।
শুভ্রঃ কেমিক্যালস সব রেডি আছে?
রাজ্জাকঃ...
ব্যাচেলর ইন ট্রিপ চলচ্চিত্রে অনবদ্য অভিনয় লাবনি লাকির
বিশেষ প্রতিবেদক.
‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ‘ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন মডেল ও অভিনেত্রী লাবনি লাকি।গোয়েন্দাগিরিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসিম সাহনিক পরিচালিত ও আম্মাজান ফিল্মস প্রযোজিত...
১৯ মে ২০২৫ ০৪:৩৪ PMবাংলাদেশ-ইউএই ক্রিকেট সিরিজের টাইটেল স্পন্সর ওয়ালটন
স্টাফ রিপোর্টার.
শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এই সিরিজের টাইটেল স্পন্সর হয়েছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন হাই টেক ইন্ডাস্ট্রিজ...
১৭ মে ২০২৫ ০৬:০৯ AMকার্টআপ নিয়ে এলো “মে ম্যাডনেস” ক্যাম্পেইন
স্টাফ রিপোর্টার.
“কার্টআপ লিমিটেড”—ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম (ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স-এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান) নিয়ে এসেছে নতুন ক্যাম্পেইন “মে ম্যাডনেস”! এই ক্যাম্পেইন চলবে ১২ থেকে ১৮ মে, ২০২৫...
১৭ মে ২০২৫ ০৩:৫২ AMব্যাচেলর ইন ট্রিপ চলচ্চিত্রটিতে অভিজ্ঞ ও মেধাবী নতুন শিল্পীদের সমন্বয় ঘটেছে
বিনোদন প্রতিবেদক.
চলচ্চিত্র নির্মাতা নাসিম সাহনিকের আসন্ন চলচ্চিত্র ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ‘। বেঙ্গলিভয়েস.কমের সাথে ব্যাচেলর ইন ট্রিপ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন এই...
০২ মে ২০২৫ ০২:২০ PMবাড়ছে জংলির হল সংখ্যা
বিনোদন প্রতিবেদক.
মুক্তির ৪র্থ সপ্তাহে এসে ‘জংলি‘র শো বেড়েছে। আর দর্শকও ‘জংলি‘কে ভালোবাসা দিচ্ছে। ফলস্বরূপ, ছুটির দিনে ‘জংলি‘ আবারও সিঙ্গেল ডে হাইয়েস্ট গ্রস কালেকশন তুলে নিলো।...
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৩২ AMঅভিভাবকরা সাবধান! শিশুদের মধ্যেই বাড়ছে কিডনি রোগ
হু হু করে বাড়ছে শিশুদের কিডনি সমস্যা: সচেতন না হলে বিপদ বাড়বে!
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল ২০২৫ | প্রতিবেদক: Bengalivoices স্বাস্থ্য ডেস্ক
দেশে দিন দিন শিশুর কিডনির সমস্যা আশঙ্কাজনক হারে...
১০ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:০১ AM